স্মার্ট ভবিষ্যতের পথে বিশেষজ্ঞ বীমা পরামর্শদাতা
ইন্সুরস্কিল একাডেমি | প্রজেক্ট ফ্যামিলি হেপিনেস


স্মার্ট ভবিষ্যতের পথে বিশেষজ্ঞ বীমা পরামর্শদাতা | ইন্সুরস্কিল একাডেমি
স্মার্ট ভবিষ্যতের পথে বিশেষজ্ঞ বীমা পরামর্শদাতা হিসেবে ইন্সুরস্কিল একাডেমি কাজ করছে নিরলসভাবে। আধুনিক সময়ের প্রয়োজন মেটাতে এখানে প্রশিক্ষিত করা হয় দক্ষ বীমা পরামর্শদাতা, যারা গ্রাহকের আর্থিক নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় স্মার্ট সমাধান প্রদান করতে সক্ষম। পেশাদারিত্ব, আত্মবিশ্বাস এবং সঠিক দিকনির্দেশনা গড়ে তুলতে ইন্সুরস্কিল একাডেমি একটি অনন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। কোনো কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য আপনার দরকার হবে জ্ঞান, সক্ষমতা ও পারদর্শিতা। দক্ষতা নামে পরিচিত এই গুণগুলো আপনাকে কোনো বিষয়ে বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন বা বিশেষজ্ঞ হতে সাহায্য করে। আর এটাই আপনার ক্যারিয়ার ও জীবনে বড় ধরনের সাফল্য নিয়ে আসে। এই নিবন্ধে আমরা আলোচনা করবো- দক্ষতা কী? দক্ষতার প্রকারভেদ, দক্ষতা অর্জন ও তা বৃদ্ধির উপায়সহ আরো অনেক কিছু। আশাকরি শেষ পর্যন্ত আপনাকে সাথে পাবো।
বীমা শিল্পে বিশ্বস্ত পরামর্শদাতা Project Family Happiness
পরিবারের সুখ, স্বপ্ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। আর্থিক সুরক্ষা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় বীমা আজকের যুগে অপরিহার্য একটি হাতিয়ার। Project Family Happiness সেই দায়িত্বশীল যাত্রার এক বিশ্বস্ত পরামর্শদাতা, যা আপনাকে ও আপনার পরিবারকে দিচ্ছে নির্ভরযোগ্য সমাধান। এটি শুধু একটি বীমা প্রকল্প নয়, বরং আপনার প্রিয়জনের নিরাপদ আগামী গড়ার প্রতিশ্রুতি। সঠিক পরামর্শ, স্বচ্ছ সেবা ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা গড়ে তুলছি পরিবারকেন্দ্রিক সুখী ভবিষ্যৎ।
চলুল যেনে নেওয়া যাক বীমা শিল্পের জন্য কি কি জানা প্রযয়োজন।
বীমা শিল্প একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং দায়িত্বশীল ক্ষেত্র, যেখানে মানুষের অর্থ, ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা এবং আস্থা জড়িয়ে থাকে। তাই এই শিল্পে কাজ করার জন্য শুধু বিক্রয়কৌশল নয়, বরং গভীর জ্ঞান, দক্ষতা এবং নৈতিকতা প্রয়োজন। নিচে বিস্তারিতভাবে বীমা শিল্পের জন্য জানা প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো—
১. বীমার মৌলিক ধারণা
বীমা কীভাবে কাজ করে, কেন মানুষ বীমা গ্রহণ করে এবং এর সামাজিক ও আর্থিক গুরুত্ব কী এসব বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকা জরুরি।
জীবন বীমা, স্বাস্থ্য বীমা, শিক্ষা বীমা, সাধারণ বীমা (যেমন অগ্নি, দুর্ঘটনা বা গাড়ি বীমা) এ ধরনের পলিসির পার্থক্য ও প্রয়োগ জানতে হয়।
২. আইন ও নীতিমালা সম্পর্কে জ্ঞান
বীমা শিল্পে কাজ করার জন্য আইন ও নীতিমালা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। কারণ বীমা একটি নিয়ন্ত্রিত খাত, যা সরকারের নির্ধারিত আইন, বিধি-বিধান এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নীতিমালার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। প্রতিটি বীমা চুক্তি আইনি দলিল হিসেবে গণ্য হয়, যেখানে গ্রাহক ও প্রতিষ্ঠানের অধিকার ও দায়িত্ব নির্ধারিত থাকে। তাই একজন বীমা প্রতিনিধি বা কর্মকর্তার জানা দরকারকোন শর্তে পলিসি কার্যকর হবে, কোন ক্ষেত্রে দাবি (Claim) গ্রহণযোগ্য হবে, কমিশন কাঠামো কেমন, গ্রাহকের অধিকার কী এবং প্রতিষ্ঠানকে কোন নিয়ম মেনে চলতে হবে। আইন ও নীতিমালা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকলে গ্রাহককে সঠিক তথ্য দেওয়া যায় না, ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঝুঁকি থাকে এবং প্রতিষ্ঠান আইনি জটিলতায় পড়তে পারে। অর্থাৎ, বীমা শিল্পে টেকসই ও বিশ্বাসযোগ্য সেবা নিশ্চিত করার মূলভিত্তি হলো আইন ও নীতিমালা সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান। বীমা খাত সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট আইন ও বিধিমালার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।গ্রাহকের অধিকার, দাবি (Claim) নিষ্পত্তির নিয়ম, কমিশন কাঠামো, চুক্তির শর্তাবলি ইত্যাদি ভালোভাবে জানা আবশ্যক। এসব জ্ঞান না থাকলে গ্রাহককে সঠিক তথ্য দেওয়া যায় না এবং প্রতিষ্ঠান আইনি জটিলতায় পড়তে পারে।
৩. আর্থিক ও গণিতভিত্তিক জ্ঞান
বীমা শিল্পে সফল হতে হলে আর্থিক ও গণিতভিত্তিক জ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ বীমার মূল কাঠামো গড়ে উঠেছে ঝুঁকি নিরূপণ, সম্ভাব্য ক্ষতির হিসাব, প্রিমিয়াম নির্ধারণ এবং দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক পরিকল্পনার ওপর। একজন বীমা প্রতিনিধি বা কর্মকর্তাকে জানতে হয় কীভাবে গ্রাহকের আয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সঠিক প্রিমিয়াম নির্ধারণ করতে হবে, কোন পরিকল্পনায় কত বছর পর কত অর্থ ফেরত আসবে কিংবা বিনিয়োগ করলে কী পরিমাণ লাভ পাওয়া যাবে। এজন্য লভ্যাংশ, সময়ের মূল্য (Time Value of Money), সম্ভাব্যতা (Probability), পরিসংখ্যান, ঝুঁকি বিশ্লেষণ এবং আর্থিক পরিকল্পনার মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।
এছাড়া গ্রাহকের কাছে বীমার সুবিধা সহজভাবে উপস্থাপন করতে হলে জটিল আর্থিক হিসাবকে সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করার দক্ষতাও থাকতে হয়। ভুল হিসাব বা অনিশ্চিত অনুমান শুধু গ্রাহকের ক্ষতি নয়, প্রতিষ্ঠানের জন্যও বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই বলা যায়, বীমা শিল্পে আর্থিক ও গণিতভিত্তিক জ্ঞানই হলো গ্রাহকের সঠিক চাহিদা অনুযায়ী নির্ভরযোগ্য সমাধান দেওয়ার অন্যতম প্রধান ভিত্তি।
ক. বীমা মূলত ঝুঁকি (Risk) ও সম্ভাবনার (Probability) ওপর ভিত্তি করে কাজ করে।
খ. লভ্যাংশ, প্রিমিয়াম হিসাব, রিটার্ন, বিনিয়োগের সম্ভাব্য মুনাফা ইত্যাদি সঠিকভাবে বুঝতে পারা জরুরি।
এর জন্য মৌলিক আর্থিক জ্ঞান ও সংখ্যাগত বিশ্লেষণ দক্ষতা থাকতে হবে।


৪. গ্রাহক ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগ দক্ষতা
বীমা শিল্পে গ্রাহক ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগ দক্ষতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। কারণ বীমার মূল ভিত্তিই হলো আস্থা এবং দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক। একজন বীমা প্রতিনিধি বা কর্মকর্তা শুধু পলিসি বিক্রি করলেই দায়িত্ব শেষ হয় না; বরং গ্রাহকের প্রয়োজন বুঝে সঠিক পরিকল্পনা দেওয়া, নিয়মিত যোগাযোগ রাখা এবং যেকোনো সমস্যার দ্রুত সমাধান করাই প্রকৃত গ্রাহক ব্যবস্থাপনা। গ্রাহকের সঙ্গে স্পষ্ট, ভদ্র ও আন্তরিকভাবে কথা বলা, তাদের প্রশ্নের সহজভাবে উত্তর দেওয়া এবং জটিল বিষয়গুলো সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা একটি বড় যোগাযোগ দক্ষতা। পাশাপাশি, গ্রাহকের উদ্বেগ মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং তাদের আর্থিক অবস্থা বা ভবিষ্যৎ লক্ষ্য অনুযায়ী পরামর্শ দেওয়া আস্থা গড়ে তোলে।
বীমা শিল্পে গ্রাহক ব্যবস্থাপনা কেবল একবারের লেনদেন নয়; বরং এটি দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক রক্ষার প্রক্রিয়া। ভালো যোগাযোগ দক্ষতা থাকলে গ্রাহক সন্তুষ্ট থাকে, নতুন গ্রাহক রেফার করে এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিশ্বস্ততা বাড়ে। তাই বলা যায়, গ্রাহক ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগ দক্ষতা ছাড়া বীমা শিল্পে সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়। বীমা শিল্পে সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হলো গ্রাহকের আস্থা অর্জন করা। এজন্য কার্যকর যোগাযোগ, সহজভাবে বোঝানোর ক্ষমতা এবং গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সমাধান দেওয়ার দক্ষতা থাকা দরকার। শুধু পলিসি বিক্রি নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তোলার মানসিকতা থাকতে হবে।
৫. বিক্রয় ও আলোচনার কৌশল
বীমা শিল্পে বিক্রয় ও আলোচনার কৌশল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতার মধ্যে একটি। কারণ বীমা কোনো দৃশ্যমান পণ্য নয়; এটি হলো ভবিষ্যৎ সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি। তাই গ্রাহককে বোঝানো, আস্থা তৈরি করা এবং তাকে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার জন্য প্রভাবশালী বিক্রয় কৌশল প্রয়োজন। একজন দক্ষ বীমা প্রতিনিধি প্রথমেই গ্রাহকের প্রয়োজন ও আর্থিক অবস্থার বিশ্লেষণ করেন। এরপর তিনি গ্রাহকের ভাষায়, সহজ ও বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে বীমার সুবিধা ব্যাখ্যা করেন। এতে গ্রাহক বুঝতে পারেন যে বীমা তার জন্য কীভাবে কার্যকর হবে। তবে শুধু বোঝানো নয়, গ্রাহকের আপত্তি বা দ্বিধাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং যৌক্তিকভাবে তার সমাধান দেওয়া আলোচনা কৌশলের অংশ। বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ধৈর্য, আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক মনোভাব অত্যন্ত জরুরি। কখনোই গ্রাহকের ওপর চাপ সৃষ্টি না করে বরং তার উদ্বেগ দূর করে তাকে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সহায়তা করাই আসল কৌশল। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং সেবার মান বজায় রাখাও বিক্রয় সাফল্যের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অতএব, বলা যায় যে বিক্রয় ও আলোচনার কৌশল বীমা শিল্পে শুধু পলিসি বিক্রি নয়, বরং গ্রাহকের আস্থা অর্জন ও দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক তৈরির মূল ভিত্তি।

৬. প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতা
আধুনিক বীমা শিল্পে প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতা একটি অপরিহার্য দক্ষতা হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ ডিজিটাল যুগে গ্রাহক সেবা, পলিসি ম্যানেজমেন্ট, দাবি (Claim) প্রক্রিয়া এবং তথ্য সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ সবই প্রযুক্তির মাধ্যমে হয়ে থাকে। একজন বীমা কর্মকর্তা বা পরামর্শদাতাকে প্রয়োজন হয় কম্পিউটার, মোবাইল অ্যাপ, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করার সক্ষমতা। প্রযুক্তি দক্ষতার মাধ্যমে কাজের গতি বাড়ে, তথ্য সংরক্ষণ নিরাপদ হয় এবং গ্রাহককে দ্রুত সেবা প্রদান করা সম্ভব হয়। উদাহরণস্বরূপ, অনলাইন পলিসি বুুকিং, প্রিমিয়াম পেমেন্ট, ক্লেইম ট্র্যাকিং এবং গ্রাহকের আর্থিক তথ্য বিশ্লেষণে সফটওয়্যার ব্যবহার করা যায়। এছাড়া ডিজিটাল মার্কেটিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন গ্রাহক আকৃষ্ট করা সম্ভব। বীমা শিল্পে প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতা কেবল সময় ও খরচ বাঁচায় না, বরং গ্রাহকের সন্তুষ্টি ও আস্থা বাড়িয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান শক্ত করে। তাই বলা যায়, প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতা হলো আধুনিক বীমা পেশাজীবীর সফলতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। আধুনিক বীমা শিল্পে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, মোবাইল অ্যাপ, ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম এবং ডাটা ম্যানেজমেন্ট ব্যবহার করা হয়। তাই তথ্যপ্রযুক্তি, সফটওয়্যার ও ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ধারণা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৭. নৈতিকতা ও পেশাগত সততা
বীমা শিল্পে নৈতিকতা ও পেশাগত সততা হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি। কারণ বীমা গ্রাহকের অর্থ এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত, যেখানে আস্থা ও বিশ্বাসের গুরুত্ব অপরিসীম। একজন বীমা কর্মকর্তা বা পরামর্শদাতাকে সবসময় সততা, ন্যায্যতা এবং দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করতে হয়। নীতিমূলক আচরণে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করা হয় না। পলিসি, প্রিমিয়াম, দাবি (Claim) এবং অন্যান্য আর্থিক বিষয়গুলো সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা, এবং প্রতিষ্ঠানের নীতি অনুযায়ী কাজ করা নৈতিকতার অংশ। পেশাগত সততা মানে শুধু নিয়ম মেনে চলা নয়, বরং গ্রাহকের স্বার্থ ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তির প্রতিও দায়বদ্ধ থাকা। বীমা শিল্পে নৈতিকতা এবং সততা না থাকলে গ্রাহকের আস্থা হারায়, প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়। তাই বলা যায়, নৈতিকতা ও পেশাগত সততা হলো বীমা শিল্পে টেকসই সাফল্য এবং দীর্ঘমেয়াদী গ্রাহক সম্পর্ক গড়ার মূল ভিত্তি। বীমা শিল্পে মানুষের আস্থা সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাই গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা না করা, সঠিক তথ্য দেওয়া এবং নৈতিকভাবে কাজ করা জরুরি। সততা ছাড়া এই শিল্পে টিকে থাকা সম্ভব নয়।
৮. বাজার ও প্রতিযোগিতা সম্পর্কে ধারণা
বীমা শিল্পে বাজার ও প্রতিযোগিতা সম্পর্কে গভীর ধারণা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই খাতে গ্রাহকের চাহিদা, নতুন প্রোডাক্ট এবং প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড সবসময় পরিবর্তিত হয়। একজন বীমা কর্মকর্তা বা পরামর্শদাতার জন্য জানা প্রয়োজন কোন ধরনের বীমা পলিসি বর্তমানে গ্রাহকদের কাছে জনপ্রিয়, কোন প্রোডাক্ট বাজারে কম জনপ্রিয়, প্রতিযোগীরা কী ধরনের অফার দিচ্ছে এবং নতুন ট্রেন্ড বা প্রযুক্তি কীভাবে ব্যবসায় প্রভাব ফেলছে। বাজার বিশ্লেষণের মাধ্যমে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সাজানো যায় এবং প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা তৈরি করা সম্ভব। এছাড়া, নতুন পলিসি ডিজাইন করা, বিক্রয় কৌশল উন্নত করা এবং বিপণন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য বাজার ও প্রতিযোগিতা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা জরুরি। সহজভাবে বললে, বাজার ও প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জ্ঞান হলো বীমা প্রতিষ্ঠানের স্থিতিশীলতা, নতুন সুযোগ সৃষ্টির ক্ষমতা এবং দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য নিশ্চিত করার একটি অপরিহার্য হাতিয়ার। অন্য প্রতিষ্ঠান কী ধরনের প্রোডাক্ট দিচ্ছে, বাজারে কোন ধরনের বীমার চাহিদা বেশি এসব জানতে হবে। নতুন নতুন প্রোডাক্ট ডিজাইন ও মার্কেটিং কৌশল নির্ধারণ করতে হলে বাজার বিশ্লেষণ অত্যন্ত জরুরি।
জ্ঞানভিত্তিক দক্ষতা কী?
জ্ঞানভিত্তিক দক্ষতা হলো কোনো নির্দিষ্ট কাজ, ক্ষেত্র বা বিষয়ে প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে কাজ করার ক্ষমতা। সহজভাবে বললে, এটি এমন এক ধরনের দক্ষতা যেখানে কোনো ব্যক্তি তার অর্জিত শিক্ষা, গবেষণা বা অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া জ্ঞানকে বাস্তব পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করতে পারে।
১. স্কিল বা দক্ষতা কী?
স্কিল বা দক্ষতা হলো মানুষের অর্জিত জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং অভ্যাসকে কাজে লাগিয়ে কোনো কাজ সঠিকভাবে ও দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করার সামর্থ্য। এটি মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমটি হলো হার্ড স্কিল, যা দৃশ্যমান ও পরিমাপযোগ্য দক্ষতা। এর মধ্যে রয়েছে প্রযুক্তিগত জ্ঞান, আইনগত নীতি সম্পর্কে ধারণা, আর্থিক হিসাব করার সক্ষমতা কিংবা কম্পিউটার ব্যবহারের দক্ষতা। এই ধরনের স্কিল সাধারণত প্রশিক্ষণ, শিক্ষা বা নির্দিষ্ট অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জিত হয় এবং পেশাগত জীবনে সরাসরি প্রয়োগ করা যায়। স্কিল বা দক্ষতা মানুষের অর্জিত জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং অভ্যাসকে কাজে লাগিয়ে কোনো কাজ সঠিকভাবে ও দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করার সামর্থ্য।
এটি দুই ধরনের হতে পারে।

i. হার্ড স্কিল:
হার্ড স্কিল হলো এমন এক ধরনের দক্ষতা যা পরিমাপযোগ্য, নির্দিষ্ট এবং সরাসরি কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলো সাধারণত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জিত হয় এবং পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করা যায়। হার্ড স্কিলকে বলা হয় “টেকনিক্যাল স্কিল” কারণ এগুলো বিশেষ কোনো কাজ বা পেশা সম্পাদনের জন্য অপরিহার্য। যেমন: একজন ডাক্তারকে যেমন রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করার নির্দিষ্ট জ্ঞান থাকতে হয়, তেমনি একজন বীমা পরামর্শদাতাকে আর্থিক হিসাব, নীতি বোঝা বা প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হতে হয়।
হার্ড স্কিল সাধারণত স্পষ্টভাবে শেখানো যায় এবং এগুলো লিখিত বা ব্যবহারিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, কম্পিউটার ব্যবহার, ডেটা অ্যানালাইসিস, আর্থিক হিসাব, বিদেশি ভাষার দক্ষতা, আইন ও নীতি সম্পর্কে ধারণা, প্রোগ্রামিং বা সফটওয়্যার ব্যবহারের ক্ষমতা ইত্যাদি হার্ড স্কিলের অন্তর্ভুক্ত।
বীমা শিল্পে হার্ড স্কিলের গুরুত্ব অনেক বেশি। একজন বীমা কর্মীকে গ্রাহকের আর্থিক অবস্থা বিশ্লেষণ করতে হয়, সঠিক নীতি নির্বাচন করতে হয়, নথিপত্র তৈরি ও প্রসেসিং করতে হয় এবং প্রযুক্তিগত প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তথ্য পরিচালনা করতে হয়। এগুলো সবই হার্ড স্কিলের অংশ।
সহজভাবে বললে, হার্ড স্কিল হলো সেই সব ব্যবহারিক ও টেকনিক্যাল দক্ষতা যা ছাড়া কোনো পেশাগত কাজ দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদন করা সম্ভব নয়। যেমন, প্রযুক্তিগত জ্ঞান, আইনগত নীতি, আর্থিক হিসাব, কম্পিউটার ব্যবহার।
ii. সফট স্কিল:
সফট স্কিল হলো মানুষের ব্যক্তিত্ব, আচরণ, যোগাযোগের ধরণ ও সামাজিক দক্ষতার সমন্বয়। এগুলোকে অনেক সময় “পিপল স্কিল” বা “হিউম্যান স্কিল”ও বলা হয়, কারণ এগুলো মূলত মানুষে-মানুষে সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং কার্যকরভাবে কাজ করার সঙ্গে সম্পর্কিত। হার্ড স্কিল যেখানে নির্দিষ্ট ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের ওপর নির্ভর করে, সেখানে সফট স্কিল নির্ভর করে মানুষের মানসিকতা, মনোভাব, আচরণ এবং আবেগীয় বুদ্ধিমত্তার (Emotional Intelligence) ওপর।
সফট স্কিল সাধারণত পরিমাপ করা কঠিন, তবে কর্মক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন যোগাযোগ দক্ষতা, নেতৃত্বের ক্ষমতা, টিমওয়ার্ক, সমস্যা সমাধান, সময় ব্যবস্থাপনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ধৈর্য, সহমর্মিতা, এবং গ্রাহককে প্রভাবিত করার ক্ষমতা ইত্যাদি। বীমা শিল্পে সফট স্কিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন বীমা প্রতিনিধি বা পরামর্শদাতাকে শুধু নীতি বা আর্থিক পরিকল্পনা বোঝানো নয়, বরং গ্রাহকের সঙ্গে বিশ্বাস ও আস্থার সম্পর্ক তৈরি করতেও সক্ষম হতে হয়। গ্রাহকের সমস্যায় সহমর্মিতা দেখানো, সহজ ভাষায় সমাধান ব্যাখ্যা করা, তাদের উদ্বেগ দূর করা এবং দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক বজায় রাখাই সফট স্কিলের মাধ্যমে সম্ভব। সহজভাবে বললে, সফট স্কিল হলো সেই সব ব্যক্তিত্বগত ও আন্তঃসম্পর্ক বিষয়ক দক্ষতা যা মানুষকে সমাজে এবং কর্মক্ষেত্রে আরও কার্যকর, গ্রহণযোগ্য ও সফল করে তোলে। যেমন, যোগাযোগ ক্ষমতা, নেতৃত্ব, সমস্যা সমাধান, গ্রাহকের সঙ্গে আচরণ ইত্যাদি।
হার্ড স্কিল-সফট স্কিল এর বাইরেও দক্ষতাকে আরো কয়েকভাগে ভাগ করা যায়।
১. জব স্কিল
২. লাইফস্কিল
৩. পারসোনাল লাইফ স্কিল
৪. স্পোর্টস স্কিল
৫. স্টুডেন্ট স্কিল
৬. সোশ্যাল স্কিল বা সামাজিক দক্ষতা ইত্যাদি
কিছু স্কিল বা দক্ষতা এমন রয়েছে যা শুধুমাত্র চাকরিদাতার প্রত্যাশা পূরণ করে না, বরং নিজেকে আরও কার্যকরভাবে গড়ে তুলতে এবং দলের সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করার জন্যও প্রয়োজন। এই ধরনের স্কিল কর্মীকে পেশাগত জীবনে অগ্রাধিকার দেয় এবং ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে সফল হতে সহায়তা করে। বিশেষত নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনা দক্ষতা যে কোনো কাজের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি একজনকে দলের লক্ষ্য অর্জনে নেতৃত্ব দিতে, কাজের পরিকল্পনা করতে এবং সময় ও সম্পদ সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে সক্ষম করে। নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনা দক্ষতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত দলের দায়িত্ব ভাগাভাগি করা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সমস্যা সমাধান, দলের মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখা এবং সদস্যদের উৎসাহিত করা। এই দক্ষতা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং পুরো দলের এবং প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নিশ্চিত করে। ফলে একজন কর্মী এই দক্ষতা থাকলে চাকরির বাজারে অন্যদের তুলনায় এক ধাপ এগিয়ে থাকে এবং কার্যকরভাবে কাজের মান বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়। (Job Skills Examples) কিছু স্কিল বা দক্ষতা আছে যা শুধুমাত্র চাকরিদাতারাই প্রত্যাশা করেন না বরং নিজের ভূমিকা বৃদ্ধি ও অন্যদের সাথে ভালোভাবে কাজ করার জন্যও দরকার। স্কিলকে অনেক প্রকরণ করা যায়। তবে এখানে কিছু কমন জব স্কিলের কথা উল্লেখ করবো। নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনা দক্ষতাসমূহ (Leadership and Management Skills) যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনা দক্ষতা খুবই জরুরি। এ দক্ষতা আপনাকে চাকরির বাজারে কয়েক ধাপ এগিয়ে রাখবে। এ ধরনের দক্ষতাগুলো হচ্ছে-
ক. পরামর্শ (Advising)
খ. কোচিং (Coaching)
গ. বিরোধনিষ্পত্তি (Conflict resolution)
ঘ. সিদ্ধান্ত গ্রহণ (Decision making)
ঙ.প্রতিনিধিত্ব (Delegating)
চ.কূটনীতি (Diplomacy)
ছ.সাক্ষাৎকার (Interviewing)
জ.প্রেরণা/প্রেষণা (Motivation)
ঝ.মানবব্যবস্থাপনা (People management)
ঞ. সমস্যা সমাধান (Problem solving)
ট.কৌশলগত চিন্তা (Strategic thinking)
ঠ. পেশাদারি দক্ষতাসমূহ ( Professionalism Skills)
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, বিশেষ করে চাকরির ক্ষেত্রে, পেশাদারিত্ব বা প্রফেশনালিজম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি কেবল কাজ করার দক্ষতা নয়, বরং একজন কর্মীর আচরণ, মনোভাব, নৈতিকতা এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আচরণের মানকে নির্দেশ করে। পেশাদারিত্ব থাকলে কর্মী দায়িত্বশীলভাবে কাজ করে, সততা বজায় রাখে এবং সহকর্মী ও গ্রাহকের সঙ্গে সম্মানজনক সম্পর্ক তৈরি করে। পেশাদারিত্বের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সময়মতো কাজ সম্পন্ন করা, দায়িত্ব পালন, সৎ ও নৈতিক আচরণ, স্পষ্ট ও ভদ্রভাবে যোগাযোগ করা, এবং নিজের ওপর বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখা। এছাড়া পেশাগত উপস্থিতি পোশাক, আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গিতেও প্রফেশনাল মান বজায় রাখা প্রয়োজন। সহজভাবে বললে, পেশাদারিত্ব হলো সেই গুণ যা কর্মীকে দক্ষতার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তির সাথে মানিয়ে চলতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘমেয়াদে সাফল্য, গ্রাহকের আস্থা ও পেশাগত উন্নতির পথ সুগম করে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, বিশেষ করে চাকরির ক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব বা প্রফেশানালিজম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের দক্ষতার মধ্যে রয়েছে-
ক. ডেডিকেশন (Dedication)
খ. নীতি-নৈতিকতা (Ethics)
গ. সততা (Honesty)
ঘ. অখণ্ডতা/ঐক্য (Integrity)
ঙ. পরিপক্কতা (Maturity)
চ. ধৈর্য (Patience)
ছ. উপস্থাপনা (Presentation)
জ. নির্ভরযোগ্যতা (Reliability)
ঝ.আত্মবিশ্বাস (Self confidence)
ঞ. সাংগঠনিক দক্ষতাসমূহ (Organizational Skills)
যেকোনো প্রতিষ্ঠানে কাজের ক্ষেত্রে সাংগঠনিক দক্ষতা অতি জরুরি। এই দক্ষতা একজন কর্মীকে শুধু তার নিজস্ব কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে না, বরং পুরো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে সুষ্ঠু ও কার্যকরভাবে পরিচালনায় সহায়তা করে। সাংগঠনিক দক্ষতা ছাড়া দীর্ঘদিন টিকে থাকা এবং পেশাগতভাবে সফল হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এটি প্রতিষ্ঠানের উন্নতিকে দ্রুততর করে, কাজের গতি বৃদ্ধি করে এবং সঠিক সময় ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে।
সাংগঠনিক দক্ষতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে
১. সময় ব্যবস্থাপনা: কাজের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা।
২. সম্পদ ও তথ্য সংরক্ষণ: প্রয়োজনীয় নথি, তথ্য ও সম্পদ সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবহার করা।
৩. প্রকল্প ও কাজের সমন্বয়: বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় রক্ষা করা এবং দলগত লক্ষ্য অর্জনে অবদান রাখা।
৪. পরিকল্পনা ও প্রাধান্য নির্ধারণ: দীর্ঘমেয়াদী এবং স্বল্পমেয়াদী কাজের পরিকল্পনা তৈরি করা এবং গুরুত্ব অনুযায়ী কাজ ভাগ করা।
৫. প্রতিক্রিয়া ও মূল্যায়ন: কাজের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা, সমস্যা চিহ্নিত করা এবং সমাধান বের করা।
সহজভাবে বললে, সাংগঠনিক দক্ষতা হলো সেই ভিত্তি যা কর্মীকে তার কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে, দলের সঙ্গে সমন্বয় রাখতে এবং প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে কার্যকরভাবে অবদান রাখতে সক্ষম করে অথাৎ যেকোনো প্রতিষ্ঠানে কাজের ক্ষেত্রে সাংগঠনিক দক্ষতা অতি জরুরি। এ দক্ষতা ছাড়া দীর্ঘদিন টিকে থাকা কঠিন। এ দক্ষতা প্রতিষ্ঠানের উন্নতিকে তরান্বিত করে। এ ধরনের দক্ষতার মধ্যে আছে-
- তথ্য শ্রেণীবদ্ধকরণ (Categorizing data)
- সমন্বয়মূলক (Coordinating)
- লক্ষ্য নির্ধারণ (Goal setting)
- ডেডলাইন মেনে চলা (Meeting deadlines)
- মাল্টি টাস্কিং (Multi-tasking)
- অগ্রাধিকার নির্ধারণ (Prioritizing)
- প্রকল্প ব্যবস্থাপনা বা পরিচালনা (Project management)
- (সময়সূচি) Scheduling
- কৌশলগত পরিকল্পনা (Strategic Planning)
- সময় ব্যবস্থাপনা (Time management)
- দল গঠনের দক্ষতাসমূহ (Team Building Skills)
দলগঠন বা টিম বিল্ডিং অন্যতম জব স্কিল। এ ধরনের দক্ষতাগুলো হচ্ছে- যে দক্ষতা একজন কর্মীকে কার্যকরভাবে একটি দলের সঙ্গে কাজ করতে এবং দলের লক্ষ্য অর্জনে অবদান রাখতে সাহায্য করে। এটি কেবল একজন ব্যক্তির পেশাগত ক্ষমতা নয়, বরং পুরো দলের সাফল্য নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত বীমা শিল্পের মতো ক্ষেত্রে, যেখানে বিক্রয়, গ্রাহক সেবা এবং প্রক্রিয়াগত কাজগুলো একাধিক কর্মীর সমন্বয়ে সম্পন্ন হয়, টিম বিল্ডিং স্কিলের গুরুত্ব আরও বেশি।
ক. সহযোগিতা (Collaboration)
খ. যোগাযোগ (Communication)
গ. নমনীয়তা (Flexibility)
ঘ. শ্রবণ (Listening)
ঙ.পর্যবেক্ষণ (Observation)
চ. অংশগ্রহণ (Participation)
ছ. সম্মান (Respect)
জ. ভাগ করে নেয়া (Sharing)
ঝ. বিশ্লেষণী দক্ষতা (Analytical Skills)
অ্যানালাইটিক্যাল স্কিল যেকোনো চাকরি বা জবের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সঠিক সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষেত্রে এই দক্ষতা অসামান্য ভূমিকা পালন করে। এ ধরনের দক্ষতার মধ্যে রয়েছে-
ক. বিশ্লেষণী চিন্তা (Critical thinking)
খ. তথ্য বিশ্লেষণ (Data analysis)
গ. সংখ্যা দক্ষতা (Numeracy)
ঘ. প্রতিবেদন ( Reporting)
ঙ.গবেষণা (Research)
চ.সমস্যা সমাধান (Troubleshooting)
ছ.লাইফ স্কিলের উদাহরণ (Life Skills Examples)
অনেক দক্ষতা আছে যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের জন্য প্রয়োজনীয়। অবশ্য এটা আপনি জীবনের কোন পর্যায়ে আছেন, তার ওপর নির্ভর করে। তাছাড়া ব্যক্তিভেদে দক্ষতাগুলো আলাদা হতে পারে। এখানে কিছু বিশেষ দক্ষতার কথা উল্লেখ করা হলো, যা আপনাকে স্বাধীন ও আত্মনির্ভশীলতা অর্জনে সহায়তা করবে। লাইফ স্কিল হলো সেই মৌলিক দক্ষতা যা ব্যক্তিকে দৈনন্দিন জীবন এবং পেশাগত জীবনে সফলভাবে নিজেকে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। এই স্কিলগুলো শুধু কর্মক্ষেত্রে নয়, বরং ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং শিক্ষাজীবনেও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ লাইফ স্কিলের মধ্যে রয়েছে সমস্যা সমাধান, সময় ব্যবস্থাপনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, যোগাযোগ দক্ষতা, মানসিক চাপ মোকাবিলা এবং টিমওয়ার্ক। এগুলো একজনকে নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ, সমস্যা চিহ্নিত করা এবং কার্যকর সমাধান বের করার ক্ষমতা দেয়। লাইফ স্কিলের মাধ্যমে মানুষ আত্মনির্ভরশীল হয়, সামাজিক ও পেশাগত সম্পর্ক মজবুত করে এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। সহজভাবে বলা যায়, লাইফ স্কিল হলো প্রতিদিনের জীবনকে আরও সুসংগঠিত, সুষ্ঠু এবং সফলভাবে পরিচালনার মূল হাতিয়ার অথাৎ কিছু সাধারণ লাইফ স্কিল
- গাড়ি চালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ
- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
- জরুরি প্রস্তুতি
- প্রাথমিক চিকিৎসা
- জামা-কাপড় ভাজ ও ইস্ত্রি করা
- মৌলিক রান্না-বান্না করা
- বাগান রক্ষণাবেক্ষণ
- সময় মতো কাজের জন্য বা স্কুলের জন্য প্রস্তুতি
- বিছানা করা
- পারিবারিক বাজেট তৈরি
- দৈনন্দিন কেনাকাটা
- গোছানো : ঘর, বাথরুম/টয়লেট, আলমিরা, গ্যারেজ ইত্যাদি
- রুম রঙ করা বা সাজানো
- প্যারেন্টিং
- টেবিল পাতা ও পরিষ্কার করা
- পড়াশোনা
- ময়লা অপসারণ
- কাপড়, বাসন, উইন্ডো বা গাড়ি ধোয়া এবং শুকানো
- ব্যক্তিক জীবন দক্ষতার উদাহরণ (Personal Life Skills Example)
অনেক ধরনের দক্ষতা আছে, যেগুলো মানুষের ব্যক্তিগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই স্কিলগুলো শুধু পেশাগত জীবন নয়, ব্যক্তিগত জীবনকেও সমৃদ্ধ করে এবং মানুষের মানসিক, সামাজিক ও নৈতিক বিকাশে সাহায্য করে। সঠিক পারসোনাল লাইফ স্কিল থাকা একজনকে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীল, দায়িত্বশীল এবং সুষ্ঠুভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার যোগ্য করে তোলে। পারসোনাল লাইফ স্কিলের মধ্যে রয়েছে সময় ব্যবস্থাপনা, সমস্যা সমাধান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ, আত্মনির্ভরতা, কার্যকর যোগাযোগ, মানসিক স্থিরতা এবং ধারাবাহিকভাবে নিজেকে উন্নত করার ক্ষমতা। এই দক্ষতাগুলো থাকলে ব্যক্তি তার দৈনন্দিন জীবনকে আরও সুসংগঠিত, সমৃদ্ধ এবং অর্থপূর্ণভাবে পরিচালনা করতে পারে। সহজভাবে বলা যায়, পারসোনাল লাইফ স্কিল হলো সেই শক্তি যা জীবনকে সফল, স্বনির্ভর এবং মানসম্মত করে তোলে।
- অভিযোজনযোগ্যতা (Adaptability)
- যত্নশীলতা (Caring)
- কাণ্ডজ্ঞান (Common Sense)
- সহযোগিতা (Cooperation)
- কৌতূহল (Curiosity)
- প্রচেষ্টা (Effort)
- নমনীয়তা (Flexibility)
- বন্ধুত্ব (Friendship)
- উদ্যোগ (Initiative)
- অখণ্ডতা (Integrity)
- সংগঠন (Organization)
- ধৈর্য (Patience)
- অধ্যবসায় (Perseverance)
- সমস্যা সমাধান (Problem-Solving)
- দায়িত্ব (Responsibility)
- সেন্স অফ হিউমার (Sense of Humour)
- স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট (Stress Management)
- মৌখিক এবং অমৌখিক যোগাযোগ (Verbal & Non-Verbal communication)
- স্টুডেন্টস স্কিলের উদাহরণ (Student Skill Examples)
কোনো কিছু শেখার জন্য শিক্ষার্থীদের অনেক দক্ষতা প্রয়োজন। সেগুলো শুধু আপনার পরবর্তী পড়াশোনার জন্যই উপকারে আসবে না। বরং বর্তমান ধাপের পড়াশোনায় সফল হতেও দরকার হবে। তেমনই কিছু প্রয়োজনীয় দক্ষতার কথা এখানে উল্লেখ করা হলো-
- দায়িত্বশীলতা (Accountability)
- তথ্য বিশ্লেষণ (Analyzing information)
- যোগাযোগ (Communication)
- ক্রিটিক্যাল থিংকিং (Critical thinking)
- ডিজিটাল সাক্ষরতা ( Digital literacy)
- নির্দেশনা অনুসরণ (Follow directions)
- কল্পনা (Imagination)
- উদ্যোগ (Initiative)
- সংগঠন (Organization)
- সমস্যা সমাধান (Problem solving)
- প্রশ্ন করা (Questioning)
- পড়া (Reading)
- সময় ব্যবস্থাপনা (Time management)
- লেখালিখি (Writing)
- দক্ষতা ও সামর্থ্য (skills and abilities) কি এক জিনিস?
আসুন আগে জানি জ্ঞান সম্পর্কে। জ্ঞান বা নলেজ হচ্ছে- কোনো বিষয়ের তাত্ত্বিক বা ব্যবহারিক বুঝ। ধরুন- একজন চাকরিজীবীর গ্রাফিক্স ডিজাইনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ফটোশপ সফটওয়্যার সম্পর্কে জানেন। তার মানে এই না যে, কীভাবে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হওয়া যায় তা-ও তিনি জানেন। এর প্রকৃত অর্থ হচ্ছে- ফটোশপ জিনিসটি কী, এটা দিয়ে কী করা হয় তা জানেন। দক্ষতা বা স্কিল হচ্ছে প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জিত পারদর্শিতা। ধরুন- ফটোশপ ব্যবহার করে যদি একজন ডিজাইন করতে পারেন সেটা হচ্ছে ওই ব্যক্তির দক্ষতা। তার মানে স্কিল হচ্ছে- সাধারণভাবে যে জ্ঞানটা আপনি শিখে নিয়েছেন। আমরা জ্ঞানের স্থানান্তরের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নত করতে পারি। আর সামর্থ্য হচ্ছে কোনোকিছু করার সক্ষমতা। স্কিল ও অ্যাবিলিটির মধ্যে সামান্য পার্থক্য আছে। অনেকে বলেন, এদের মধ্যে পার্থক্য হলো বিষয়টা শেখা হয়েছে নাকি সহজাত। তবে আমাদের মতে অ্যাবিলিটি হচ্ছে- কোনো কিছুর সংগঠন ও অগ্রাধিকার; যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি কোনো দক্ষতা অর্জন ও তার বিকাশ করতে পারে।
নলেজ (K), স্কিল (S) ও অ্যাবিলিটি (A) – টার্ম তিনটি আমাদের ক্যারিয়ারের জন্য অপরিহার্য। নিয়োগকারীরা নিয়োগ প্রক্রিয়া চলাকালে জ্ঞান, দক্ষতা ও সামর্থ্যের সন্ধান করে। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও ব্যবস্থাপকেরা যখন কর্মচারীদের বদলি ও পদোন্নতির কথা বিবেচনা করেন তখন KSA ব্যবহার করেন। আমরা আরেকটু আলোচনা করলে দক্ষতা ও সামর্থ্যের মধ্যে পার্থক্যটি আরো পরিষ্কার হবে। যদি আমরা কোনো সংস্থার জনশক্তির মধ্যে থাকা দক্ষতার ফাঁকফোঁকরগুলো সমাধান করতে চাই তাহলে আগে নির্ধারণ করতে হবে সমস্যার মূলবিন্দু। এরপর তা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ- যদি সমস্যাটি জ্ঞানগত হয়, তবে আমরা একটি ইন-হাউস লাইব্রেরি তৈরি করতে পারি, যেখান থেকে কর্মীরা জ্ঞানার্জন করতে পারবেন। তবে যদি সমস্যাটি দক্ষতা হয় তবে দরকার হবে প্রশিক্ষণ। এবং যদি সামর্থ্য বা সক্ষমতা উন্নত করার প্রয়োজন হয়, তাহলে ব্যক্তিগত কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করে তার বাস্তবায়নে নজর দিতে হবে।
দক্ষতা বৃদ্ধির উপায় কী?
আপনার দক্ষতা বাড়ালে ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে তার সুফল পাবেন। নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সুযোগের নতুন নতুন দরজা আপনার সামনে উন্মোচিত হবে। দক্ষ ব্যক্তি সব সময়ই প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকেন। পরিবেশ পরিস্থিতি তার অনুকূলে থাকে। যা-ই হোক দক্ষতা বা স্কিল বৃদ্ধির কিছু উপায় এখানে আলোচনা করা হলো-
১. আপনি যে দক্ষতাগুলো বাড়াতে চান তার একটি তালিকা করুন।
২. দক্ষতার উন্নয়নে সময় ও অর্থ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিন।
৩. বাস্তব লক্ষ্য ও মাইলস্টোন নির্ধারণ করুন।
৪. একজন কোচ বা মেন্টর খুঁজে নিন।
৫. লক্ষ্য বাস্তবায়নে একটি সুন্দর পরিকল্পনা করুন।
৬. সহযোগিতা নিন
৭. অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করুন।
৮. আনন্দের সাথে শিখুন।

এবার আসুন দক্ষতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে একটু বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
দক্ষতার তালিকা তৈরি কিছু দক্ষতার চাহিদা তুলনামূলকভাবে বেশি। তাই শুরু করার আগে নিশ্চিত হোন, আপনার কোন দক্ষতা বেশি কাজে আসবে। কিংবা দক্ষতা আপনার কাজের সাথে সম্পর্কযুক্ত। সেক্ষেত্রে আপনি জীবন ও ক্যারিয়ারের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে ফেলুন।
দক্ষতার উন্নয়নে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিন এবার চিন্তা করুন- আপনি কেন দক্ষতার উন্নয়ন চান? কোন বিষয়টি আপনাকে এজন্য উৎসাহিত করছে? দক্ষতার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সময় ও অর্থ বিনিয়োগে আপনি কি প্রস্তুত? এসব বিষয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার পর দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ও অর্থের সংস্থান করুন।
বাস্তব লক্ষ্য ও মাইলস্টোন নির্ধারণ করুন
বাস্তব লক্ষ্য হলো এমন লক্ষ্য যা স্পষ্ট, পরিমাপযোগ্য এবং অর্জনযোগ্য, যা আপনার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি আপনার ব্যক্তিগত বা পেশাগত জীবনে একটি নির্দিষ্ট দিক নির্দেশ করে এবং আপনাকে সঠিক পথে এগোতে সাহায্য করে। বাস্তব লক্ষ্য নির্ধারণের সময় অবশ্যই লক্ষ্যটি স্পষ্ট (Specific), পরিমাপযোগ্য (Measurable), অর্জনযোগ্য (Achievable), প্রাসঙ্গিক (Relevant) এবং সময়নির্ধারিত (Time-bound) হতে হবে এগুলো মিলিয়ে SMART পদ্ধতি নামে পরিচিত। মাইলস্টোন হলো লক্ষ্য অর্জনের পথে ছোট, পর্যায়ক্রমিক ধাপ বা অর্জনযোগ্য নিদিষ্ট লক্ষণ। এটি আপনার অগ্রগতির মানদণ্ড হিসেবে কাজ করে এবং বড় লক্ষ্যটি ধাপে ধাপে অর্জন করা সহজ করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার লক্ষ্য হয় “এক বছর পরে নতুন পেশাগত দক্ষতা অর্জন করা”, তবে মাইলস্টোন হতে পারে প্রথম তিন মাসে প্রয়োজনীয় কোর্স সম্পন্ন করা, পরবর্তী তিন মাসে প্রজেক্টে প্রয়োগ করা, এবং ছয় মাসের মধ্যে দক্ষতার প্রমাণমূলক ফলাফল অর্জন করা।
আপনার দক্ষতা লেভেল চিহ্নিত করুন। আপনার বর্তমান পরিস্থিতিতে এর কতটুকু উন্নয়ন করা সম্ভব সেসব বিবেচনায় নিয়ে একটি বাস্তব লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। একই সাথে লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করুন।
একজন কোচ বা মেন্টর খুঁজে নিন
বীমা শিল্পে একজন কোচ বা মেন্টরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই খাতে সফল হতে হলে শুধু প্রযুক্তিগত জ্ঞান বা বিক্রয় দক্ষতা যথেষ্ট নয়, বরং বাজারের পরিবর্তন, গ্রাহকের মনোবিজ্ঞান, নীতি-আইন এবং পেশাগত নৈতিকতা সম্পর্কে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। একজন মেন্টর বা কোচ নতুন বা অভিজ্ঞ বীমা কর্মকর্তা দুজনকেই সঠিক কৌশল, বিক্রয় পদ্ধতি এবং গ্রাহক ব্যবস্থাপনা শেখাতে সাহায্য করে। মেন্টরের উপস্থিতিতে বীমা কর্মকর্তা তার দুর্বল দিক চিহ্নিত করতে পারে, লক্ষ্য নির্ধারণে সহায়তা পায় এবং কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা বৃদ্ধি করে। এছাড়া মেন্টর অভিজ্ঞতার মাধ্যমে রিয়েল-লাইফ উদাহরণ শেয়ার করে, যাতে নতুন কর্মকর্তা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আত্মবিশ্বাসী হয়। সহজভাবে বললে, বীমা ক্ষেত্রে একজন কোচ বা মেন্টর হলো গাইড ও পথপ্রদর্শক, যিনি কর্মীর পেশাগত বৃদ্ধি এবং দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আপনি যে ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করতে চান, সেই ক্ষেত্রের একজন সফল মানুষকে আপনার কোচ বা মেন্টর হিসেবে বেছে নিন। এ ধরনের ব্যক্তিদের আপনি আশেপাশেই খুঁজে পাবেন। কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সিনিয়র পারসনের সাথে কথা বলতে পারেন। তাছাড়া লিংকডইনের মতো প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক সাইট বা পেশাগত ক্লাব বা সংস্থা থেকে একজন উপযুক্ত ব্যক্তিকে খুঁজে নিন।
দক্ষতা উন্নয়নে একটি পরিকল্পনা করুন
দক্ষতা উন্নয়ন হলো একটি লক্ষ্যভিত্তিক প্রক্রিয়া, যা ধারাবাহিক প্রয়াস ও পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যক্তির পেশাগত ও ব্যক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি করে। প্রথমে নিজেকে মূল্যায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ আপনার শক্তি, দুর্বলতা এবং শেখার চাহিদা চিহ্নিত করুন। এরপর স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, যা বাস্তবসম্মত, পরিমাপযোগ্য এবং সময়সীমা নির্ধারিত হওয়া উচিত। বড় লক্ষ্যকে ছোট ধাপে ভাগ করা প্রয়োজন। প্রতিটি ধাপ বা মাইলস্টোন একটি অর্জনযোগ্য লক্ষ্য হিসেবে কাজ করবে, যা অগ্রগতি সহজে পর্যবেক্ষণযোগ্য করে। উদাহরণস্বরূপ, প্রথমে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নেওয়া, এরপর অনুশীলন করা এবং শেষ পর্যন্ত বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা।
একজন কোচ বা মেন্টরের সাহায্য নেওয়া দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে খুব কার্যকর। মেন্টর অভিজ্ঞতার মাধ্যমে দিকনির্দেশনা প্রদান করে, ত্রুটি চিহ্নিত করে এবং সঠিক কৌশল শেখায়। নিয়মিত অনুশীলন, ফিডব্যাক গ্রহণ এবং অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা দক্ষতা উন্নয়নের অংশ। সহজভাবে বললে, দক্ষতা উন্নয়ন হলো পরিকল্পিত, ধারাবাহিক এবং পর্যায়ক্রমিক প্রয়াস, যা ব্যক্তিকে তার লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম করে এবং পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে সাফল্য নিশ্চিত করে। আপনি যখন লক্ষ্য ও মাইলস্টোন নির্ধারণ করে ফেলেছেন, এবার তা অর্জনের জন্য একটি পরিকল্পনা দরকার। কোন বিষয়ে কোথায় ও কখন প্রশিক্ষণ নিবেন সেটা ঠিক করুন। কখন ও কীভাবে অনুশীলন করবেন তারও পরিকল্পনা করতে ভুলবেন না যেন!
১.সহযোগিতা নিন
শক্তিশালী সাপোর্ট সিস্টেম দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি বড় বিষয়। এক্ষেত্রে পেশাগত সংস্থার কার্যক্রমে অংশ নিন। নেতৃত্ব বিষয়ক বিভিন্ন ক্লাস করুন অথবা এমন সব ইভেন্টে অংশ নিন যেখানে বিশিষ্টজনদের সাথে যোগাযোগ গড়ে তোলা এবং প্রয়োজনে তাদের সহযোগিতা নিতে পারেন।
৩.অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে রাখুন
আপনার দক্ষতাকে পর্যবেক্ষণ করুন। কতটুকু এগুলেন, কতটুকু বাকি আছে- তা বোঝার চেষ্টা করুন। সেজন্য একটি ফিডব্যাক সিস্টেম তৈরি করতে পারেন। নিজের কাজ বা কথাগুলো রেকর্ড করে দেখতে অথবা অন্যদের জিজ্ঞেস করতে পারেন। কাউকে মডেল ধরে তার সাথে নিজেকে মিলিয়ে দেখুন।
৪.আনন্দের সাথে শিখুন
দক্ষতা উন্নয়ন বা নতুন কিছু শেখা হতে পারে আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা। সুতরাং আনন্দের সাথে ধীরে ধীরে শিখুন। চাপ নেবেন না। আত্মবিশ্বাস রাখুন। পরিশেষে বলা যায়- দক্ষতা হলো যা আপনাকে জীবনে আত্মবিশ্বাসী ও স্বাধীন করে তোলে। এটি সাফল্যের জন্য অপরিহার্য। অনুশীলন ও অভিজ্ঞতার দ্বারা দক্ষতা তৈরি হয়। তবে প্রায় সব দক্ষতাই শেখা বা উন্নত করা যেতে পারে। নিজের বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা ও লক্ষ্যগুলি নির্ধারণ করুন। শিখুন এবং নিজেকে গুছিয়ে নিন।
প্রতিটি পেশার মানুষের কেন প্লান ইন্সুরেন্স স্কিল থাকা দরকার
প্রতিটি পেশার মানুষই জীবনের বিভিন্ন ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়। চাকরি, ব্যবসা বা অন্য কোনো পেশায় থাকুক, স্বাস্থ্যঝুঁকি, আয়ের ক্ষতি, দুর্ঘটনা, আকস্মিক অসুস্থতা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি সবসময় সম্ভব। এই ঝুঁকিগুলো মোকাবিলায় প্ল্যান ইন্সুরেন্স স্কিল থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই স্কিলের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সঠিকভাবে নিজের আর্থিক অবস্থা মূল্যায়ন করতে পারে, প্রয়োজনীয় বীমা পরিকল্পনা বেছে নিতে পারে এবং বিভিন্ন পলিসির সুবিধা ও প্রিমিয়াম তুলনা করে সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হয়। প্ল্যান ইন্সুরেন্স স্কিল কেবল ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং পরিবারের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, মূল উপার্জনকারীর অকাল মৃত্যু বা গুরুতর অসুস্থতা ঘটলে বীমার মাধ্যমে পরিবার আর্থিকভাবে স্থিতিশীল থাকে। এই স্কিলের মাধ্যমে মানুষ ভবিষ্যতের ঝুঁকি পূর্বানুমান করতে পারে, আর্থিক পরিকল্পনা তৈরি করতে পারে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে চাপ ও অস্থিরতা কমাতে পারে।
এছাড়া, এই দক্ষতা একজনকে পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে আরও দায়িত্বশীল ও সচেতন করে তোলে। একজন কর্মী বা পেশাজীবী বীমার প্রয়োজনীয়তা ও সুবিধা বোঝার মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে, যা তার ভবিষ্যত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। সহজভাবে বলা যায়, প্রতিটি পেশার মানুষের জন্য প্ল্যান ইন্সুরেন্স স্কিল হলো ঝুঁকি মোকাবিলা, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং আত্মবিশ্বাসী জীবনযাপনের মূল হাতিয়ার।
Project Family Happiness-এর মাধ্যমে স্কিল গঠনে বীমা শিল্পের সহায়তা
Project Family Happiness একটি উদ্যোগ যা মানুষকে তাদের আর্থিক ও জীবনভিত্তিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যক্তি শুধু বীমা পণ্য সম্পর্কে জ্ঞানই অর্জন করে না, বরং প্রয়োজনীয় স্কিল ও দক্ষতা গড়ে তুলতে সক্ষম হয় যা প্রতিটি পেশার মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
বীমা শিল্পের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে Project Family Happiness বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান করে—প্রথমত, এটি ব্যক্তিদের আর্থিক পরিকল্পনা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা শেখায়, যাতে তারা ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার মোকাবিলা করতে পারে। দ্বিতীয়ত, গ্রাহক ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ ও বিক্রয় দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ প্রদান করে, যা পেশাগত জীবনে কার্যকর ও আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করে। তৃতীয়ত, এটি নৈতিকতা ও পেশাগত সততা, দলগত কাজ ও টিম বিল্ডিং এর মতো সফট স্কিল গড়ে তুলতে অবদান রাখে, যা দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের জন্য অপরিহার্য।
এছাড়া, Project Family Happiness বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, মেন্টরশিপ এবং অনলাইন-অফলাইন সেশন মাধ্যমে বাস্তব জীবনের উদাহরণ ও প্রয়োগের সুযোগ দেয়। ফলে, অংশগ্রহণকারীরা কেবল তাত্ত্বিক জ্ঞানই নয়, বরং বাস্তব পরিস্থিতিতে দক্ষতা প্রয়োগ করার অভিজ্ঞতাও অর্জন করে।
নিম্নে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষণীয়ভাবে তুলে ধরা হল:
ক. আর্থিক পরিকল্পনা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা শেখানো: ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার মোকাবিলার জন্য বীমা ও আর্থিক নিরাপত্তা সম্পর্কে ধারণা প্রদান।
খ. গ্রাহক ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগ দক্ষতা উন্নয়ন: পেশাগত জীবনে কার্যকর যোগাযোগ ও সম্পর্ক গড়ে তোলার সক্ষমতা বৃদ্ধি।
গ. বিক্রয় ও আলোচনার কৌশল শেখানো: সঠিক পলিসি প্রেজেন্টেশন ও বিক্রয় কৌশল আয়ত্ত করা।
ঘ. নৈতিকতা ও পেশাগত সততা গড়ে তোলা: দায়িত্বশীল ও বিশ্বস্ত আচরণ বজায় রাখতে সহায়তা।
ঙ. দলগত কাজ ও টিম বিল্ডিং দক্ষতা বৃদ্ধি: সহযোগিতা ও সমন্বয়মূলক কাজের মাধ্যমে দলগত সাফল্য নিশ্চিত করা।
চ. বাস্তব জীবনের উদাহরণ ও প্রয়োগের সুযোগ: তাত্ত্বিক জ্ঞানকে বাস্তব পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করার অভিজ্ঞতা প্রদান।
ছ. মেন্টরশিপ ও গাইডেন্স প্রদান: অভিজ্ঞ কোচ বা মেন্টরের মাধ্যমে সঠিক দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ পাওয়া।
১.Project Family Happiness-এর মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ বীমা পরামর্শদাতার ভূমিকা
Project Family Happiness একটি উদ্ভাবনী উদ্যোগ যা বীমা শিল্পের বিশেষজ্ঞ পরামর্শদাতাদের জন্য দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরামর্শদাতারা গ্রাহকের আর্থিক ও জীবনভিত্তিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়। তারা কেবল পলিসি বিক্রেতা হিসেবে নয়, বরং গ্রাহকের আর্থিক পরিকল্পনার গাইড হিসেবে কাজ করেন।
পরামর্শদাতারা গ্রাহকের প্রয়োজন ও ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে সঠিক বীমা পরিকল্পনা সাজান। Project Family Happiness-এর প্রশিক্ষণ ও মেন্টরশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে তারা যোগাযোগ, বিক্রয় কৌশল, গ্রাহক ব্যবস্থাপনা, নৈতিকতা ও পেশাগত সততা এর মতো দক্ষতা অর্জন করে। এছাড়া বাস্তব জীবনের উদাহরণ ও অনুশীলনের মাধ্যমে তারা শিখে কীভাবে গ্রাহকের সমস্যার সমাধান করতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষজ্ঞ বীমা পরামর্শদাতা কেবল পলিসি বিক্রেতা নয়, বরং একজন আর্থিক গাইড ও ঝুঁকি পরামর্শক। তারা গ্রাহকের প্রয়োজন ও ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে সঠিক বীমা পরিকল্পনা সাজান। তাদের প্রধান দায়িত্ব হলো
- গ্রাহকের আর্থিক চাহিদা ও ঝুঁকি মূল্যায়ন করা।
- বিভিন্ন বীমা পলিসি ও পরিকল্পনার সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা ব্যাখ্যা করা।
- গ্রাহককে দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করা।
- নৈতিকতা ও পেশাগত সততা বজায় রেখে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করা।

Project Family Happiness-এর মাধ্যমে দলগত স্কিল: টিম বিল্ডিং, নেতৃত্ব ও সমন্বয়।
Project Family Happiness কেবল ব্যক্তিগত দক্ষতা নয়, বরং দলগত স্কিল উন্নয়নের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা শিখে কিভাবে দলগত কাজের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করতে হয়, দায়িত্ব ভাগাভাগি করতে হয় এবং কার্যকর নেতৃত্ব প্রদর্শন করতে হয়। এটি পেশাগত জীবনে কার্যকর টিমওয়ার্ক ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। টিম বিল্ডিং-এর মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা শিখে কিভাবে একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হয়, সঠিকভাবে সংলাপ ও মতবিনিময় করতে হয় এবং দলগত লক্ষ্য অর্জনে অবদান রাখতে হয়। নেতৃত্বের দক্ষতা অর্জন করে তারা দলের উদ্দেশ্য নির্ধারণ, প্রেরণা যোগানো এবং সমস্যা সমাধানে দিকনির্দেশনা প্রদানের ক্ষমতা অর্জন করে। পাশাপাশি সমন্বয় দক্ষতা অংশগ্রহণকারীদের সক্ষম করে যে তারা বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে এবং প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অনুযায়ী দলকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে। ইন্সুরস্কিল একাডেমি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও মেন্টরশিপের মাধ্যমে এই দক্ষতা বৃদ্ধি করে, যা পরামর্শদাতাকে গ্রাহকের সাথে কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম করে।
ক. ইন্সুরস্কিল একাডেমির অবদান
খ. ইন্সুরস্কিল একাডেমি বীমা শিল্পের জন্য বিশেষজ্ঞ পরামর্শদাতাদের প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কশপ ও বাস্তব অনুশীলনের সুযোগ প্রদান করে।
গ. অংশগ্রহণকারীরা বাস্তব জীবনের বীমা পরিকল্পনার প্রয়োগ শিখে।
ঘ. SMART লক্ষ্য নির্ধারণ ও মাইলস্টোনের মাধ্যমে অগ্রগতি পরিমাপ করতে সক্ষম হয়।
ঙ. মেন্টরশিপের মাধ্যমে অভিজ্ঞ পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়।
চ. নৈতিকতা, পেশাগত সততা এবং গ্রাহক আস্থা অর্জন নিশ্চিত হয়।
স্মার্ট ভবিষ্যতের পথে বিশেষজ্ঞ বীমা পরামর্শদাতা হওয়া শুধু পেশাগত নয়, ব্যক্তিগত জীবনের নিরাপত্তার জন্যও অপরিহার্য। Project Family Happiness এর মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা কেবল বীমা পণ্য ও পরিকল্পনা সম্পর্কে জ্ঞানই অর্জন করে না, বরং বিভিন্ন দক্ষতা ও স্কিলও বিকাশ করে।
এই প্রকল্পের সাহায্যে তারা হার্ড স্কিল যেমন আর্থিক জ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহার, সফট স্কিল যেমন যোগাযোগ, বিক্রয় ও সমস্যা সমাধান, এবং পারসোনাল স্কিল যেমন সময় ব্যবস্থাপনা ও আত্মনির্ভরতা অর্জন করে। পাশাপাশি, দলগত স্কিল টিম বিল্ডিং, নেতৃত্ব ও সমন্বয় ও উন্নত হয়। মেন্টরশিপ, বাস্তব উদাহরণ এবং নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা আত্মবিশ্বাসী, দায়িত্বশীল ও কার্যকর পরামর্শদাতা হিসেবে গড়ে ওঠে।
সহজভাবে বলা যায়, Project Family Happiness অংশগ্রহণকারীদেরকে দক্ষ, নৈতিক ও নেতৃত্বগুণসম্পন্ন বীমা পরামর্শদাতা হিসেবে তৈরি করে, যা তাদের গ্রাহকের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বীমা শিল্পে দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য অর্জনে সক্ষম করে।
সূত্র:
উইকিপিডিয়া
SMART লক্ষ্য নির্ধারণ
Doran, G. T. (1981). There’s a S.M.A.R.T. way to write management’s goals and objectives. Management Review, 70(11), 35–36.
দক্ষতা শ্রেণীবিভাগ ও সফট স্কিল
Robles, M. M. (2012). Executive perceptions of the top 10 soft skills needed in today’s workplace. Business Communication Quarterly, 75(4), 453–465.
লিডারশিপ ও টিম বিল্ডিং
Katzenbach, J. R., & Smith, D. K. (1993). The Wisdom of Teams: Creating the High-Performance Organization. Harvard Business School Press.
পারসোনাল লাইফ স্কিল ও জীবন দক্ষতা
World Health Organization (WHO). Life Skills Education Framework. Geneva: WHO.
ইন্সুরেন্স ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
Vaughan, E. J., & Vaughan, T. M. (2014). Fundamentals of Risk and Insurance. 11th Edition. Wiley.
মেন্টরশিপ ও কোচিং
Kram, K. E. (1985). Mentoring at Work: Developmental Relationships in Organizational Life. Glenview, IL: Scott, Foresman.

